বিল গেটস এর ১২ নীতি ! অনুসরনে আপনার উদ্যোগে আসবে গতি

‘ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব ম্যানেজার ডিজিটাল জগৎকে  আয়ত্তে আনতে পারবে তারা তুলনামূলক বেশি সুবিধা পাবে৷’  – বিল গেটস 

যদি আশির দশক কোয়ালিটির হয়ে থাকে, তাহলে নব্বইয়ের দশক ছিল ইঞ্জিনিয়ার এবং ২০০০-এর দশক হবে ভেলসিটির (দ্রুততা)৷ কতো তাড়াতাড়ি ব্যবসা নিজে নিজেই চালিত হবে, কিভাবে তথ্য একেক কনজিউমারের লাইফ স্টাইল বদলে দেবে এবং ব্যবসার প্রতি তাদের প্রত্যাশা কি হবে৷ কোয়ালিটি ও ব্যবসায় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটবে অতি দ্রুত যতো বেগের মাত্রা (ভেলসিটি) বাড়তে থাকবে, ব্যবসার প্রকৃতিরও ততো পরিবর্তন হবে৷ ডিজিটাল এইজে আমরা একটি বড় ডিজিটাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার তৈরি করতে পেরেছি৷ এটা মানুষের নার্ভাস সিস্টেমের মতো৷ কোম্পানির এ রকম নার্ভাস সিস্টেম থাকা দরকার যেন তা অবাধে ও দক্ষতার সঙ্গে চালানো যায়, যার প্রয়োজন সে যেন খুব তাড়াতাড়ি কোম্পানি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য জানতে পারে৷ দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ও কাস্টোমারের সঙ্গে যেন মিথষ্ক্রিয়া করতে পারে৷ পরবর্তী দশকের সফল কোম্পানি হবে সেগুলো, যারা ডিজিটাল টুলস ব্যবহার করবে কাজের জন্য৷ ডিজিটাল ইনফরমেশন ফ্লোকে আপনার কোম্পানির অপরিহার্য অংশ হিসেবে গড়ে তোলার ১২টি উপায় নিম্নরূপ :

০১ : মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ
বড় কোম্পানি একটি প্রতিযোগী ছোট কোম্পানি থেকে কৌশল পরিচালনা করতে পারে কর্মচারীদের এনার্জি ও ডিজিটাল সিস্টেমের দিক থেকে৷ ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও দায়িত্বশীলতা এমন একটি পরিবেশ তৈরি করে, যা আলোচনা করাটাও উত্‍সাহিত করে৷ ডিজিটাল নার্ভাস সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ই-মেইল, যা ওই কাজটি করতে সাহায্য করে৷ এটা মধ্যবর্তী ম্যানেজারকে ইনফরমেশন ফিলেটারস (filleters) থেকে ডুয়ারস (doers)-এ পরিণত করে৷ এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, ই-মেইল সংস্কার ক্রম উচ্চ শ্রেণীবিভাগ ভেঙে দেয়৷ এটা মানুষকে কথা বলতে উৎসাহিত করে৷ ম্যানেজারকে শুনতে উৎসাহিত করে৷ এ জন্য কাস্টোমাররা যখন জানতে চায়, ইনফরমেশন সিস্টেমে আরো বেশি মূল্যবোধ পাওয়ার প্রধান বিষয়টা কি এবং যা একযোগে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করতে পারবে! আমি সব সময় বলি ই-মেইল৷ আমি আমার কর্মচারীদের পাঠানো সব ই-মেইল পড়ি এবং এগুলো অ্যাকশনের জন্য মানুষের কাছে পাঠিয়ে দেই৷ যারা মাইক্রোসফটে কাজ করে তাদের অ্যাটিচিউড এবং ইসুজ, যা অনেক মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে এ রকম বিষয় সম্পর্কে সচেতন থাকতে পারি অযাচিত মেইলের মাধ্যমে৷ বৃদ্ধরা বলে থাকে জ্ঞানই শক্তি যা মাঝে মধ্যে মানুষকে জ্ঞান ভান্ডারে পরিণত করে৷ তারা বিশ্বাস করে, জ্ঞান অর্জন তাদের অপরিহার্য করে তোলে৷ সঞ্চিত জ্ঞান থেকে শক্তি আসে না বরং শেয়ার করা জ্ঞান থেকেই আসে৷ একটি কোম্পানির মূল্যবোধ ও প্রতিদান এ আইডিয়াকে প্রতিফলিত করে৷ আমি পাশের জনের কাছ থেকে সব সময় ভালো খবর পেতে চাই কিন্তু এটা আমাকে অবিশ্বাসীতে পরিণত করে৷ আমি আশ্চর্য হই, কোনো খারাপ খবর আমি শুনছি না৷ যখন কেউ আমাকে ই-মেইল করে জানায়, আমরা একটা একাউন্ট জয় করেছি, আমি সব সময় চিন্তা করি, আরো অনেক একাউন্ট আছে যেগুলো সম্পর্কে কেউ মেইল পাঠায়নি৷ এর মানে কি আমরা অন্যগুলোতে হেরেছি। একটা ভালো ই-মেইল সিস্টেম খারাপ খবর দ্রুত পৌছানোর নিশ্চয়তা দেবে কিন্তু আপনার লোকদের সেই ইচ্ছা থাকতে হবে৷ আপনাকে খারাপ খবর পাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং পরে এর ওপর নির্ভর করে কাজ করতে হবে৷ মাঝে মধ্যে আমি চিন্তা করি, একজন সিইও (CEO) হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো খারাপ খবর শোনা৷ আপনি যদি এর ওপর কোনো কাজ না করেন তাহলে ঘটনাক্রমে আপনার লোকেরা খারাপ খবর আর আপনার নজরে আনবে না এবং এটাই শেষ হওয়ার জন্য শুরু !

০২ : অনলাইনে সেলস ডেটা পড়ুন ও সহজেই অন্তরদৃষ্টি দিয়ে শেয়ার করুন
‘আপনার নাম্বারগুলো জানুন’ এটা ব্যবসার একটি মৌলিক নীতি৷ আপনার বিজনেস ডেটা সংগ্রহ করুন প্রতি পদক্ষেপে এবং আপনার কাস্টোমারের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া ঘটান৷ আপনার পার্টনারের সঙ্গেও৷ তখন আপনি বুঝবেন ডেটাগুলো কি বোঝাচ্ছে৷ শুরু থেকেই ডিজিটাল ডেটা তৈরি হলো পজিটিভ ইভেন্টের দিকে ট্রিগার চাপা৷ কোকা-কোলা কোম্পানি ডেটা কালেকশন করছে স্মার্ট ভেন্ডারিং মেশিন, সেল ফোন বা ইনফ্রারেড সিগনালের মাধ্যমে৷ স্থানীয় পর্যায়ে পিসি বেজড রিস্টকিং প্রোগ্রাম চালু আছে, যা ডেটা বিশ্লেষণ করে একটা ডেলিভারি স্লিপ পাঠায় এবং পরিচালক বুঝতে পারেন কোথায় স্টক করতে হবে পরবর্তী দিনে৷ ডিজিটাল ডেটার সুবিধা নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় নতুন ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করে৷ টেক্সাসে একটি ফিউয়েলিং গ্যাস স্টেশনে একটি পাইলট প্রোগ্রাম চালু আছে, যেখানে কুক কিনতে হলে কাস্টোমারকে ডেবিট কিংবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে হয়৷ যারা পাম্পে পে করে তাদের বেশির ভাগ বিল্ডিংয়ে যেতে চায় না, পাম্পের ডিজিটাল সেলস সিস্টেম কুক কেনার জন্য নতুন কাস্টোমার জোগাচ্ছে৷ যখন ফিগারগুলো ইলেকট্রনিক ফর্মে থাকে গুগল ওয়ার্কাররা তা বিশ্লেষণ করতে পারে, টাকা লিখতে পারে, বিস্তারিত জানতে পারে অথবা তারা যা চায় এবং একযোগে কাজ করার জন্যও পাঠাতে পারে৷ এতে ব্যবসার ডিজিটাল পরিবর্তন হবে৷

০৩ : নলেজ ওয়ার্কারদের উচ্চ পর্যায়ে চিন্তা করার জন্য তৈরি করুন
একটি কোম্পানির মধ্যবর্তী ম্যানেজার ও লাইন কর্মচারীরা উচ্চ পর্যায়ের একজিকিউটিভ নন, তাদের বিজনেস ডেটা দেখার দরকার নেই৷ তারা সেই ব্যক্তি যাদের নির্ভুল, অ্যাকশনেবল ডেটা দরকার কারণ তারা প্রতিনিধিত্ব করবে৷ তাদের তৎক্ষণাত, স্থির ফ্লো ও সমৃদ্ধ মতামত আছে সঠিক তথ্য পাওয়ার৷ কোম্পানির উচিত, অর্থনৈতিক ডেটাগুলো কর্মচারীদের হাত থেকে রক্ষার জন্য কম সময় ব্যয় করা৷ ডেটা বিশ্লেষণও এর ওপর নির্ভর করে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতটুকু সময় ব্যয় করা উচিত৷ ম্যাকডোনাল্ডসে সাম্প্রতিক সময়েও যে ব্যক্তির ডেটা প্রয়োজন তার হাতে যাওয়ার আগে অনেক ব্যক্তির হাত স্পর্শ করে যায়৷ আজ ম্যাকডোনাল্ডস নতুন ইনফরমেশন সিস্টেম চালু করেছে পিসি ও ওয়েব টেকনলজি ব্যবহার করে, যা সব রেস্টুরেন্টে রিয়াল সময়ে হিসাব রাখতে পারে৷ যতো তাড়াতাড়ি আপনি খাবারের অর্ডার দেবেন ম্যাকডোনাল্ডসের মার্কেটিং ম্যানেজার ততো তাড়াতাড়ি তা জানবে৷ তথ্য বিশ্লেষণ নিয়ে যে নতুন নিয়ম এখানে আলোচনা করেছি তা নলেজ ওয়ার্কাররা প্যাসিভ (passive) ডেটায় পরিণত করবে একটি ইনফরমেশন দিয়ে৷ এমআইটি মিচেল ডারটউজ একে নাম দিয়েছিল ‘ইনফরমেশন অ্যাজ-এ-ভার্ব’ (information-as-a-verb).

০৪ : ভার্চুয়াল টিম গঠনের জন্য ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন
একযোগে কাজ করার জন্য ইনফরমেশন ফ্লো দিয়ে আবার চালু করার ক্ষেত্রে কোম্পানির সব ব্যক্তিকে পরস্পরের নাগালে রাখুন৷ আপনার উদ্দেশ্য হবে যারা একই সঙ্গে কাজ করছে তাদের উৎসাহিত করা, আইডিয়া শেয়ার করা, আইডিয়া নিয়ে বিতর্ক করা এবং একে অন্যের আইডিয়া তৈরি করা এবং তার ভিত্তিতে এক হওয়ার উদ্দেশ্যে কাজ করা৷ ফোর্ড (Ford)-এর প্রেসিডেন্ট এবং সিইও (CEO) জ্যাক নাসার (Jacques Nasser) তার কোম্পানির পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে থাকা কর্মচারীদের ই-মেইল পাঠান, ভালো-মন্দ খবর শেয়ার করেন সবার সঙ্গে৷ কেউ তার পাঠানো ই-মেইল থেকে বঞ্চিত হয় না৷ তিনি কর্মচারীদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন৷ পাশাপাশি প্রতি মাসে পাঠানো উত্তরগুলো পড়েন এবং তার গ্রুপের একজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন যেন তাদের প্রয়োজনীয় ব্যাপারগুলো দেখে৷ কোম্পানির গঠনতন্ত্র সব মানুষকে দায়িত্বশীল করতে পারে না এটা করতে হয় বরং কোম্পানির অ্যাটিচিউডের মাধ্যমে৷ ডিজিটাল যন্ত্রপাতি হচ্ছে দরজা খোলার ও স্থিতিশীলতার উত্তম উপায়৷ কোনো ব্যক্তি যদি একটি কাজ এক দিনের পরিবর্তে এক ঘণ্টায় করতে পারে তাহলে এটা কোম্পানির জন্য বড় পাওয়া৷

০৫ : পেপার প্রসেসকে ডিজিটাল প্রসেসে পরিণত করুন
১৯৯৬ সালে আমি মাইক্রোসফটের দিকে নজর দিলাম, যা কি না পেপারের বদলে ইলেকট্রনিক ফরম ব্যবহারকে সমর্থন করে৷ কিন্তু তখনো পেপার ব্যবহার করছিল৷ আশ্চর্য হলেও সত্যি, সে বছর আমরা ৩ লাখ ৫০ হাজার কপি কাগজ ব্যবহার করি সেলস রিপোর্ট হিসেবে৷ আমি সব কাগজের একটি করে কপি চাইলাম৷ আর আমার টেবিলে কাগজের স্তুপ তৈরি হলো, যা কি না শত শত ফরম৷ কাগজ ব্যবহার করা একটি বড় সমস্যা, এটা প্রশাসনিক প্রসেসে খুবই জটিল ও সময় নষ্ট করে৷ পেপারের বদলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অবিস্মরণীয় সাফল্য আসে৷ আমরা আমাদের কোম্পানির এক হাজারেরও বেশি ফরম থেকে মাত্র ৬০টি ফরম রাখি৷ যখন কোম্পানির কর্মচারীরা দেখে যে, সময় নষ্টকারী এবং জটিল প্রশাসনিক কাজগুলোর হাত থেকে তাদের বাচিয়ে দিচ্ছে তখন তারা বোঝে, কোম্পানি তাদের সময়ের মূল্য দেয় ও তাদের কাছ থেকে লাভ আশা করে৷

০৬ : সিঙ্গল টাস্ক জব কমিয়ে আনতে ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন
আমার এক চাচা ছিলেন, যে কি না ২৫ বছর ধরে অটো প্লান্টে কাজ করতেন৷ উনার কাজ ছিল ক্রোমিয়ামের পেরেক খোলা, যার অন্য প্রান্ত লাগানো থাকতো অটো মোবাইলে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি ছিল একটি ভালো চাকুরি৷ কিন্তু এটা ক্লাসিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপ্রোচে চলতো৷ একটি প্রসেসকে ক্ষুদ্র করা, কাজকে ভাগ করা ও প্রত্যেকের জন্য আলাদাভাবে কাজ বণ্টন করে দেয়া এবং যে কিনা শুধু সে কাজই করবে৷ বর্তমান সংস্থাগুলোতে মানুষ কোনো যন্ত্রের অংশ নয়৷ কিন্তু সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান৷ মানুষ কেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে ইন্টারেস্টিং ও চ্যালেঞ্জিং কাজ হিসেবে ধরে নেয়৷ একমাত্রিক কাজের অবসান হওয়া উচিত৷ আপনার কর্মচারীদের যদি আরামদায়ক কাজ ও উন্নত যন্ত্রপাতি দেন তখন আপনার কর্মচারী দায়িত্বশীল হবে এবং অধিক বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কাজ সম্পন্ন করবে৷ একমাত্রিক কাজগুলো কমপিউটার, রোবট ও অন্য যন্ত্রের ওপর ছেড়ে দিন যেগুলো যন্ত্রই ভালো পারে৷ ডিজিটাল এইজে প্রত্যেক কর্মচারীর ওপর আপনার নজর রাখতে হবে৷

০৭ : ডিজিটাল ফিড ব্যাক লুপ তৈরি করুন
ডিজিটাল টেকনলজি আরো উন্নত ব্যবস্থা তৈরি করে দিয়েছে, সাবেক এক মাত্রিক পুরনো কাগজের ওপর নির্ভরশীল প্রক্রিয়ার পরিবর্তন এনেছে, যা শুধু ইনক্রিমেন্টাল ইনপ্রুভমেন্ট নিয়ে আসতো আগে৷ আপনাকে স্পষ্ট ও দ্বিধাহীন থাকতে হবে, কোনো প্রয়োজনীয় প্রসেস পরিবর্তন বা সংযোজন করার ক্ষেত্রে আপনার মূল প্রজেক্টগুলো মূল্যায়নের জন্য৷

নতুন প্রসেস তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট৷ আপনার সফলতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট সংজ্ঞা, স্পষ্ট সূচনা শেষ করতে হবে সময় এবং কাজের মধ্যবর্তী মাইলস্টোন ও বাজেটের ক্ষেত্রে৷ আর ওইগুলোই ভালো প্রজেক্ট যেগুলো তে কাস্টোমারের চিত্র মনে রাখা হয়৷ এটা প্রজেক্টকে সফলতার মুখ দেখানোর সত্যিকার উপায়৷

০৮ : কাস্টোমারদের ক্যাম্পেইন তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়ার জন্য ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করুন
কাস্টোমারের কথা শোনা মানে আপনার বর্তমান পণ্যের ত্রুটিগুলো শোনা৷ কিন্তু খারাপ খবর শুনে কাস্টোমারের কথামতো পণ্য তৈরি করা খুব কঠিন৷ তাই আমি নিম্নের উপায়গুলো বলে দিতে পারি৷

* আপনার সবচেয়ে অখুশি কাস্টোমারের ওপর ফোকাস করুন৷

* টেকনোলজি ব্যবহার করুন সমৃদ্ধ তথ্য অর্জনের জন্য। তাদের অখুশি হওয়ার ওপর ভিত্তি করে এবং তারা কি পেতে চায় এতে তা খুঁজে বের করুন৷

* যতো দ্রুত সম্ভব টেকনোলজির মাধ্যমে যথাযথ ব্যক্তির কাছে সেই খবর পৌঁছে দিন৷

এ তিনটি জিনিস করলে আপনি আপনার প্রডাক্ট বা সার্ভিসের উন্নতি করতে পারবেন৷ অখুশি কাস্টোমাররা সব সময় একটি আলোচনার বিষয় এবং সে সঙ্গে এটা আপনার সবচেয়ে ভালো সুযোগ৷ আপনার ডিজিটাল সিস্টেম খারাপ খবরগুলোকে উন্নত পণ্য ও সেবায় পরিবর্তন করবে৷

০৯ : আপনার সীমানা পূর্ণ সংজ্ঞায়িত করার জন্য ডিজিটাল কমিউনিকেশন ব্যবহার করুন
একজন ম্যানেজার হিসেবে আপনার মূল ক্ষমতা সম্পর্কে জানা থাকতে হবে৷ আপনার মূল ক্ষমতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয় এ রকম কোম্পানিগুলো ভিজিট করুন এবং ওয়েব টেকনোলজির আওতায় নিয়ে আসুন যেন আপনি সেই কাজের তদারক করতে পারেন৷ ধরা যাক, অন্য একটি কোম্পানি ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব নিয়েছে কাজটির জন্য এবং মডার্ন টেকনোলজি ব্যবহার করে মানুষের কাছাকাছি থেকে কাজ করার জন্য৷ বর্তমানে পার্টনারের পরিবর্তে কর্মচারীরা কাজ করে৷

১০ : প্রত্যেক বিজনেস প্রসেসকে ইনটাইম ডেলিভারিতে পরিণত করুন
সত্যিকার অর্থে কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ গতি (speed) ইসু কালচারের সাথে যুক্ত৷ এটা কোম্পানির ভেতরের পারসেপশন পরিবর্তন করছে এবং কতোটা দ্রুততার সঙ্গে তাদের মুভ করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করে৷ প্রত্যেককে বুঝতে হবে যে আপনি যদি ঠিক সময়ে কোয়ালিটি মেইনটেন করে ডেলিভারি না দিতে পারেন তাহলে একজন প্রতিযোগী হবে৷

১১ : মধ্যবর্তী ব্যক্তি সমস্যা এড়ানোর জন্য ডিজিটাল ডেলিভারি সিস্টেম ব্যবহার করুন
১৯৯৫ সালে দি রোড এহেড (The Road Ahead)-এ আমি ফ্রিকশন-ফ্রি ((friction-free) ক্যাপিটালিজম টার্মটা ব্যবহার করি অ্যাডাম স্মিথের আইডিয়াল মার্কেট প্লেসকে ইন্টারনেট কিভাবে সাহায্য করতো তা বুঝানোর জন্যে৷ এতে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই একে অন্যকে খুব অল্প সময়ে কম খরচে খুঁজে পাচ্ছে৷ আপনি যদি মিডল ম্যান হয়ে থাকেন ইন্টারনেটের খুব সস্তা ও দ্রুত সার্ভিস আপনাকে বিলুপ্ত করবে৷ প্রডিউসার ও কনজিউমারের মধ্যে আপনার যে ভূমিকা আছে তা বিলোপ করে দেবে৷ কারণ ইন্টারনেট নিজেই সেই কাজ করবে৷ অধিকাংশ পণ্য যেগুলো অনেক পথ দিয়ে পাওয়া যায় তা কনজিউমারের জন্য সবচেয়ে ভালো সুবিধা৷ যতো কনজিউমার ওয়েব স্টাইল গ্রহণ করবে ব্যবসার ক্ষেত্রে অর্থনীতি ততোই অ্যাডাম স্মিথের সঠিক বাজারের কাছাকাছি যাবে৷

১২ : ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করুন যেন কাস্টোমাররা নিজেই সমস্যা সমাধান করতে পারে 
ইলেকট্রনিক ব্যবসার যুগে এটা শুধু মিডল ম্যানের কাজ নয় যে তাদের সঙ্গে কনজিউমারদের সম্পর্ক দৃঢ় করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করবে৷ ব্যবসায়ী যারা ডিজিটাল ক্যাশের পরিবর্তে ই-কমার্স পরিচালনা করে তারাই ভালো করবে৷ ডেল ই-কমার্স পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল৷ এটি একটি বিশ্বব্যাপী কমপিউটার সাপ্লাইয়ার কোম্পানি, যার রেভিনিউ ১৮ বিলিয়ন ডলার৷ ডেল ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝিতে অনলাইনে প্রডাক্ট বিক্রি শুরু করে৷কোম্পানিটির ব্যবসা দ্রুত বৃদ্ধি পায় যেখানে সপ্তাহে এক মিলিয়ন ডলার হতো সেখানে দিনে এক মিলিয়নে দাঁড়ায় এবং তা দ্রুতই তিন মিলিয়ন ডলার দিনে এবং পাচ মিলিয়নে পরিণত হয়৷ বর্তমানে তা ১৪ মিলিয়নে আছে৷ মাইকেল ডেল ব্যবসাকে আজ ফেইস-টু-ফেইস (face-to-face), ইয়ার-টু-ইয়ার (year-to-year) এবং কি-বোর্ড-টু-কি-বোর্ড হিসেবে পরিচয় দেন৷ সব কটির এতে স্থান রয়েছে৷ ইন্টারনেট মানুষকে রিপ্লেস করে না৷ এটা মানুষকে আরো দক্ষ করে তুলে৷

আপনি যদি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করতে চান তাহলে অনলাইনে কমিউনিকেশন বাড়িয়ে দিন৷ ইনফরমেশন শেয়ারের জন্য এবং রুটিন কমিউনিকেশন ও ফেইস-টু-ফেইস মিথস্ক্রিয়া রিজার্ভ করুন, যা কিনা অত্যাধিক মূল্যবোধ দেবে৷ আমি দি রোড এহেইডে যা বলেছি, আমরা পরবর্তী দুই বছর যা ঘটবে তার থেকে বেশি ধারণা করি এবং আগামী ১০ বছরে যা ঘটবে তার থেকে কম ধারণা রাখি৷ তাই নিজেকে নিষ্কর্মের মতো ঘুম পাড়িয়ে রাখবেন না৷

Leave a Reply